Important task for kids brain development

শিশুর মস্তিষ্ক বিকাশে ৫টি গুরুত্বপূর্ণ কাজ, আপনিও করছেন কি?

শিশুরা একইসাথে অনেক বেশি সহজ সরলতা ও অনেক বুদ্ধিমত্তার মত ব্যক্তিত্ব রাখতে সক্ষম। আপনার সন্তান হয়তো এমন অনেক অদ্ভুত কাজ করে ফেলে যে সেই মুহূর্তে আপনার মনে হয় কি বোকা আমার ছেলেটা অথবা মেয়েটা! আবার সেই একই বাচ্চা হুট করে এমন এক কাণ্ড ঘটিয়ে ফেলে যে আপনিও অবাক হয়ে যান এতো বুদ্ধি পেলো সে কোথা থেকে? আসলে অবাক হওয়ার এমন কিছুই নেই কারণ গবেষণায় দেখা গেছে, শিশুদের ৯০% ব্রেইন ডেভেলপমেন্ট হয়ে যায় প্রি স্কুলিং এইজে। অর্থাৎ ৪ বছরের আগে আপনার বাচ্চা যা দেখবে শিখবে তার ব্যক্তিত্ব, কার্যকলাপও হবে তেমনই। তাই এই বয়সে সে অনেক বিচিত্র কার্যকলাপ করে আপনাকে চমকে দেয়।

শিশুর সঠিক ব্রেইন ডেভেলপমেন্টে অনেক ধরনের এক্টিভিটি আছে যা করাটা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। চলুন আজ এমন ৫টি গুরুত্বপূর্ণ ও মজার এক্টিভিটি নিয়ে আলোচনা করি।

আয়নায় তাকিয়ে নিজেকে আবিষ্কার

আপনি কি লক্ষ্য করেছেন আপনার ছোট্ট শিশুটি আয়নায় অনেকক্ষণ তাকিয়ে থাকে, নানান ধরনের ভঙ্গি করে? হ্যাঁ, ও আসলে এভাবেই নিজেকে আবিষ্কার করে। ওর ছোট ছোট হাত, পা, নখ, ঠোঁট, চুল, নাক বা মুখ ইত্যাদি অঙ্গের দিকে তাকিয়ে অনেক কিছু সে শিখে থাকে। এই বয়সটাতে ওর কাছে সব যেন ধাধার চেয়ে কম কিছু নয়। আয়নায় তাকিয়ে পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে ও প্রতিনিয়ত ধাঁধাঁর সমাধান খুঁজে বের করে। যে হাসলে মানুষকে কতটা সুন্দর দেখায়, কাঁদলে অনেক চেহারার সাথে পারিপার্শ্বিক সবকিছুই যেন বদলে যায়, রেগে গেলে কেমন লাগে! এভাবে সে নিজেকে খুঁজে বের করতে করতে সামাজিক ও আবেগপ্রবণতা শিখে যায় আর নিজেকে সামাজিকভাবে গড়ে তুলতে পারে খুব সহজেই।

বাবল ওড়ানো


বাবল ওড়াতে আপনিও নিশ্চয়ই অনেক পছন্দ করতেন এক সময়? আপনি কি আপনার সন্তানকে বাবল কিনে বা বানিয়ে দিয়েছেন? যদি না দিয়ে থাকেন তবে খুব তাড়াতাড়ি দিন কারণ এই খেলাটি বাচ্চাদের আনন্দের সাথে কৌতূহলি মনোভাব গড়ে তুলে। আপনার বাচ্চাটি ধীরে ধীরে সৃজনশীল, শিল্পীসুলভ ও গাণিতিক দক্ষতায় পারদর্শী হয়। ঘরে বসেই কিভাবে বাবল বানাতে হয় তা শিখিয়ে দিন। এতে করে শিশু যখন নিজ হাতে ডিটারজেন্ট ও পানি দিয়ে বাবল তৈরি করবে ওর মনে অনেক বৈজ্ঞানিক প্রশ্নের কৌতূহল জাগবে। ডিটারজেন্টে কি করে ফেনা হলো পানি থেকে, বাবল কি করে হয়, এগুলো বাতাসে কি করে উড়ে ইত্যাদি। আর হ্যাঁ বাবলগুলোকে আরো মজাদার করতে রঙ মেশাতে পারেন এতে করে আপনার বাচ্চা রঙিন বাবল দেখে আরো বেশি আগ্রহ পাবে।

ক্লাইম্বিং সারফেস


দৌড়, লাফ-ঝাঁপ, কিছু বেয়ে উঠানামা এগুলো যেন বাচ্চাদের নিত্য কর্মকাণ্ড। মোটকথা ক্লাইম্বিং সারফেস বাচ্চাদের জন্য অতি আনন্দের একটি খেলা। আমরা বেশিরভাগ সময়ই বাচ্চাদের বকা ঝকা করে থাকি এসবের জন্য। কিন্তু আপনি কি জানেন, এই এক্টিভিটিগুলোর মাধ্যমে বাচ্চারা শারীরিক দক্ষতা এবং সমন্বয়ের শিক্ষা অর্জন করে? তাই যতক্ষণ না বিপদজনক হচ্ছে ততক্ষণ আপনার বাচ্চাকে নিরুৎসাহিত করবেন না। বরং প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম কিনে দিয়ে সারফেস ক্লাইম্বিংয়ে তাকে সাহায্য করুন।
এছাড়াও নিরাপদ ক্লাইম্বিং এ্রর জন্য ডাইনিং টেবিল, শেলফ, জুতোর র‍্যাক, স্ল্যাব এমন সব স্থান তাকে দেখিয়ে দিন।

স্ক্রিবলিং ও পেইন্টিং



জানেন কি শিশুরা যে আঁকাবাঁকা, হিজিবিজি লিখে বা আঁকে এটা আসলে সময় অপচয়কারী নয় বরং শিশুর মস্তিষ্কের সুস্থ বিকাশের এটি অনন্য পন্থা। আপনার বাচ্চা যখন এমন এক্টিভিটিগুলো করে তখন তাকে বাঁধা দিবেন না। কারণ সে রঙ বা সময় নষ্ট করছে না। এভাবে হিজিবিজি ও এলোমেলো আঁকাআঁকি ও লিখাগুলোই শিশুদের ছোট ছোট মাসল বা পেশি এবং হাত ও চোখের সমন্বয় গড়ে তুলে। গবেষণায় দেখা গেছে ছবি আঁকা শিশুদের সৃজনশীল ও কল্পনাশক্তিকে বাস্তবিক রূপ দিতে শেখায়। পেন্টিংয়ের মাধ্যমে বাচ্চারা রঙ চিনে ও এর ব্যবহার শিখে। কালি, পেন্সিল বা রঙ দিয়ে কিভাবে ছাপানো হয় কাগজে এভাবে চিন্তা করতে সাহায্য করে। এছাড়াও শিশু পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার গুরুত্ব শিখে। পেন্সিল বা কলম কোথায় কোনটা উপযোগী এসব ব্যবহারিক জ্ঞ্যান অর্জিত হয়।আর তাই আপনার বাচ্চা যদি রঙ করে বাসার দেয়াল গুলো হিজিবিজি করে ফেলে তাকে বকাঝকা না দিয়ে একটি নির্দিষ্ট জায়গা করে দিন ওর জন্য। দেয়ালে আর্ট পেপার লাগিয়ে দিতে পারেন ভিন্ন ভিন্ন। এতে করে বাবা মার অনুপ্রেরণা পেলে সে অনেক বেশি উৎসাহ পাবে ও এগিয়ে যাবে।
আর তাকে ক্রেয়ন, প্যাস্টেল রঙ বা জল রঙ, ক্যানভাস, স্ক্র্যাপ বই, কালারফুল আর্ট পেপার এমন বিভিন্ন ধরনের আর্টের সরঞ্জাম কিনে দিন। আর্ট ও ক্র্যাফটের কিছু দারুণ উপকরণ পাচ্ছেন chalkpencil.com এ।

পাথর ও মাটি নিয়ে খেলা



শহুরে এই যান্ত্রিক জীবনে কাঁদামাটি দিয়ে খেলার পরিবেশ ও সময় দুটোই বের করা মুশকিল। একটু অদ্ভুত শোনালেও সত্যি, শিশুদের জন্য পাথর ও মাটি দিয়ে খেলাটা অনেক বেশি উপকারী। কাঁদা মাটি ও পাথর দিয়ে খেললে শিশুর মনে কৌতুহল জাগে। প্রাকৃতিক জগৎটা শিশুর প্রকৃত জ্ঞ্যানলাভে সহায়ক বেশি। কাঁদা মাটি ঘষে, বিভিন্ন শেইপে হরেক রকম জিনিস বানিয়ে নিত্য নতুন শিক্ষা অর্জন করবে আপনার সন্তান। এছাড়াও বাচ্চারা অনেক কৌতূহলের বশে মাটি খুঁড়ে কতকিছু নতুন আবিষ্কার করে নিজে নিজে। আপনিও আপনার সন্তানের জন্য ছাদে বা বাসার সামনে ছোট্ট জায়গায় বা বারান্দায় ছোট্ট করে একটু মাটি ও পাথর দিয়ে এমন খেলার পরিবেশ তৈরি করতে পারেন। তার সাথে তাকে ম্যাগনিফাইং গ্লাস হাতে ধরিয়ে দিন যেন এর মাধ্যমে সে আরো বেশি খুঁটিনাটি জিনিসগুলো প্রত্যক্ষ করে নিজের জ্ঞানকে আরো বেশি সমৃদ্ধ করে তুলতে পারে।

শিশুতোষ বিভিন্ন ধরনের ব্রেইন ডেভেলপমেন্টমূলক খেলনা নিয়ে chalkpencil.com কাজ করছে আগামীর শিশুদের সঠিক শিক্ষায় শিক্ষিত করতে। এটাই সঠিক সময়, আপনার বাচ্চার জন্য বেছে নিন উপযুক্ত শিক্ষণীয় খেলনাটি যা তার ব্রেইন ডেভেলপমেন্টে সত্যিকারের অবদান রাখবে। মনে রাখবেন শিশুদের ৯০% ব্রেইন ডেভেলপমেন্ট হয়ে থাকে প্রি স্কুলিং এইজে। এই বয়সটিতে উপযুক্ত খেলনা বাছাই করতে পারা একটি অনন্য সিদ্ধান্ত।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Close My Cart
Close Wishlist

Close
Navigation
Categories